ম.কণ্ঠ ডেস্ক : ১১ জনের মদদে রাজধানীতে চলছে ৪৫ জন মাদক ব্যবসায়ীর মাদক সাম্রাজ্য। পৃষ্ঠপোষকদের মধ্যে রয়েছে পুলিশ, ওয়ার্ড কাউন্সিলর, ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ নেতার নাম। ঢাকা মহানগর পুলিশের সবশেষ মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকা বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য মিলেছে।
পুলিশ বলছে, প্রমাণ পেলে কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। তবে, অপরাধ বিশ্লেষকদের মতে, শুধু চুনোপুঁটিদের ধরে মাদকের থাবা থেকে মুক্তি মিলবে না।
কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহতের তালিকায় প্রতিরাতেই যোগ হচ্ছে ৮/ ১০ জন করে মাদক ব্যবসায়ীর নাম। কিন্তু ঢাকা মহানগর পুলিশের তালিকাভুক্ত ৪৫ মাদক ব্যবসায়ী ও তাদের ১১ গডফাদারদের মধ্যে কেউ এসব অভিযানের আওতায় আসেনি।
তবে, ডিএমপির সবশেষ মাদক বিষয়ক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে মিলেছে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য। প্রতিবেদন অনুযায়ী, পুলিশের ৩ কর্মকর্তা বনানী থানার এসআই আবু তাহের ভূঁইয়া, পল্লবী থানার এসআই বিল্লাল ও মাজেদ মাদক ব্যবসায়ীদের মদদ দিচ্ছেন।
গত ১৫ এপ্রিল বনানীর কড়াইল বস্তি থেকে ১৬ মাদক মামলার আসামি বাবা কাশেমকে আটক করে ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ করা হয়েছে বনানী থানার এসআই আবু তাহেরের বিরুদ্ধে। তবে এসআই তাহের এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
এসআই তাহের বলেন, ‘আমার থানারই কয়েকজন আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে চাচ্ছে। আমি ভালো কাজ করেছি দেখে পুরস্কারও পেয়েছি। আমার কাছে সব কিছুরই ডকুমেন্ট আছে। অনেক সময় অনেক কিছু মুখস্থ থাকে না। এছাড়া কেউ ভালো কাজ করলে তার পেছনে অনেকেই নারাজ থাকে।’
কাউন্সিলরদের মধ্যে রয়েছেন, ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও পল্টন থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা জামান পপি, ৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুল ওয়াদুদ নান্নুর, ২৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোশাররফ হোসেন এবং ৪ নম্বর ওয়ার্ড কমিশনার হাজী জামালের নাম।
আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে রয়েছেন, সবুজবাগের ওহাব কলোনির স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তফা জামান ওরফে বাবরী মোস্তফা, ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আসাদুল্লাহ আসাদ, কাঠাঁলবাগান ইউনিট আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মিন্টুর নাম।
এছাড়াও ৩৬ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জালালের বিরুদ্ধেও মাদক ব্যবসায় পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগ করা হয়েছে। এদের মোবাইল নম্বরে কল করে কাউকেই পাওয়া যায়নি। তবে পুলিশ বলছে, প্রমাণ সাপেক্ষে সবার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ঢাকা মহানগর পুলিশ অতিরিক্ত কমিশনার দেবদাস ভট্টাচার্য সময়নিউজকে বলেন, ‘এমন কাজ করলে তাদের চাকরিচ্যুত করা হবে । কাউকে এ বিষয়ে ছাড় দেয়া হবে না।’
শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ও তাদের পৃষ্ঠপোষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে চলমান মাদক বিরোধী অভিযান কতটা সফল হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে এই অপরাধ বিশ্লেষকের।