ম.কণ্ঠ ডেস্ক : টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে আন্তঃজেলা প্রাইভেটকার চোর চক্রের পাঁচ সদস্যকে আটক করেছে রাজশাহী জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশ।
এ ঘটনায় একটি প্রাইভেটকারও জব্দ করা হয়েছে। রোববার (২১ অক্টোবর) ভোরে ৪টার দিকে টাঙ্গাইলের কালিহাতি থানাধীন এলেঙ্গা ফিলিং স্টেশনের সামনে থেকে একটি এক্সিও চোরাই প্রাইভেটকারসহ তাদের আটক করা হয়। পরে দুপুরে রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করা হয়। ওই সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল্লাহ এই তথ্য জানান।
আটক পাঁচ সদস্যরা হলেন, ঢাকার সাভারের গেন্ডা এলাকার মামুন, চাঁদপুরের মতলবের নাওজান গ্রামের মৃত আলমাস মিয়ার ছেলে টিটু, পিরোজপুরের আলী থানার গ্রামের মৃত আবদুল কাশেমের ছেলে শহীদুল ইসলাম, বগুড়ার ফুলবাড়ী থানার রবিউল ইসলামের ছেলে আশরাফুল ইসলাম ও ফরিদপুর জেলার চরডাঙা এলাকার টিটু স্ত্রী শারমিন ওরফে রানী।
এসপি মো. শহীদুল্লাহ জানান, গত ৬ জুন বিকেল ৪টা থেকে ৬টার মধ্যে গোদাগাড়ী উপজেলার রাজাবাড়ী হাট এলাকা থেকে একটি ট্রাক চুরি হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে থানায় একটি মামলা হয়। মামলার পর জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশ দেশের ট্রাক চুরির অন্যতম মূলহোতা মনির, গিয়াসকে গ্রেফতার করে। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রাইভেটকার চোর চক্রের সদস্যদের সন্ধান বেরিয়ে আসে। এরপর জেলা ডিবি পুলিশ কার চুরি চক্রের সদস্যদের গ্রেফতারের জন্য মাঠে নামে। তিনমাস চেষ্টার পর গতকাল রোববার ভোরে কালিহাতি থেকে প্রাইভেটকারসহ তাদের আটক করা হয়। গ্রেফতারের পর তারা জানায় যে, তারা প্রাইভেটকার চুরি চক্রের পাঁচজনের একটি দল।
সংবাদ সম্মেলনে এসপি আরও বলেন, প্রথমে গাড়ি চুরি চক্রের সদস্যরা কোনো ভাল মানের প্রাইভেটকারকে টার্গেট করে। এরপর এক বা একাধিকবার ভাড়ায় বিভিন্ন এলাকায় ঘুরতে গিয়ে চালকের সঙ্গে সখ্যতা তৈরি করে। পরে সুযোগ বুঝে জুসের সঙ্গে পেইস নামে একটি অতিমাত্রার ঘুমের ট্যাবলেট মিশিয়ে খাইয়ে দেয়। সেটা খেয়ে চালক অচেতন হয়ে পড়লে তাদের মধ্যে একজন চালকের আসনে বসে গাড়ি চালাতে থাকেন। তাদের সুবিধামতো জায়গায় অচেতন হওয়া চালককে ফেলে দেয় এবং মোবাইল ফোন নিয়ে গাড়ি চালু করে। যাতে মালিকপক্ষ ফোন দিলে ফোন রিসিভ করে কৌশলে বিভিন্ন কথা বলে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে। তাদের নির্দিষ্টস্থানে পৌঁছার পর ওই ফোনটি ফেলে দেওয়া হয়। আসামিরা বিভিন্ন এলাকা হলেও ঢাকার সাভার এলাকায় পরস্পর যোগসাজেশ করে এমন চুরির ঘটনা ঘটাতো। চুরির মামলায় বিকেলে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। এখনও মামলাটির তদন্ত চলছে। এভাবে তারা কতগুলো গাড়ি চুরি করেছে তা বেরিয়ে আসবে বলেও আশাব্যক্ত করেন রাজশাহী পুলিশ সুপার। রাজশাহী জেলা পুলিশ এখন পর্যন্ত মোট ১৪টি ট্রাক ও দু’টি প্রাইভেটকার জব্দ করেছে। তদন্ত শেষ হতে এর সংকট আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।